মায়ের সঙ্গে প্রেম করে একসঙ্গে মেয়েকে ক’রলো, ফেঁসে গেল যুবক

 মায়ের সঙ্গে প্রেম করে একসঙ্গে মেয়েকে ক’রলো, ফেঁসে গেল যুবক


উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের বাসিন্দা রমা দে এবং রিয়া দে-কে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার ঝিকুড়খালিতে। বছর পাঁচেক আগে ওই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্যে। সেই ‘রোমহর্ষক’ মামলায় অবশেষে সাজা ঘোষণা করল আদালত।




মা ও মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুনের পর পুড়িয়ে ফেলার ঘটনার ৫ বছর পর চার অভিযুক্তকে দোষী সাব্যস্ত করল আদালত। শনিবার হলদিয়াকাণ্ডে চার দোষীকেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে তমলুক আদালত।




উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরের বাসিন্দা রমা দে এবং রিয়া দে-কে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ ওঠে পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার ঝিকুড়খালিতে। বছর পাঁচেক আগে ওই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছিল রাজ্যে। সেই ‘রোমহর্ষক’ মামলায় অবশেষে সাজা ঘোষণা করল আদালত। সরকারি আইনজীবী স্বপনকুমার পাঠক বলেন, “প্রায় ৪৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ এবং দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের শেষে মা-মেয়েকে নৃশংস ভাবে খুন করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দেওয়া সম্ভব হল।’’ তিনি জানান, ঘটনার সূত্রপাত ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন ভোরের দিকে হলদিয়ার ঝিকুড়খালি এলাকায় নদীর ধারে একটি ইটভাটায় কিছু পোড়ানো হচ্ছে দেখে সেখানে এগিয়ে গিয়েছিলেন কয়েক জন স্থানীয় বাসিন্দা। অকুস্থলে গিয়ে তাঁরা চমকে যান। দেখেন, দুই মহিলাকে পুড়িয়ে ফেলার চেষ্টা হচ্ছে! সঙ্গে সঙ্গে ওই খবর ছড়িয়ে যায়। স্থানীয় কাউন্সিলর ওই ঘটনায় পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। খবর পেয়ে দুর্গাচক থানার পুলিশ গিয়ে দগ্ধ দুই মহিলার দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। সেই সঙ্গে ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এক জনকে পাকড়াও করে পুলিশ।




তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে দুই মহিলার নাম এবং পরিচয়। জানা যায়, রমা এবং রিয়া ওরফে জেসিকা সম্পর্কে মা-মেয়ে। হলদিয়ার বাসিন্দা জনৈক সাদ্দাম হোসেনের সঙ্গে রমার প্রণয়ঘটিত সম্পর্ক ছিল। সাদ্দাম এক সময়ে নিউ ব্যারাকপুর এলাকায় থাকতেন। সেখানেই তাঁদের পরিচয়। পরে তিনিই বছর চল্লিশের ওই মহিলা এবং তাঁর তরুণী মেয়ের থাকার জন্য হলদিয়ার গিরিশমোড় সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি ভাড়া করেছিলেন। কিন্তু মায়ের সঙ্গে প্রণয়ের পরে মেয়ের প্রেমে পড়েন সাদ্দাম। রিয়াকে বিয়েও করেন। বিয়ের পর রিয়ার নাম হয় জেসিকা। কিন্তু মা ও মেয়ের সঙ্গে ‘জটিল’ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পর সেখান থেকে বেরোতে চাইছিলেন অভিযুক্ত। তিনি ঠিক করেন স্ত্রী এবং শাশুড়িকে খুন করবেন।






২০২০ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে একটি ফার্স্ট ফুডের দোকান থেকে খাবার কিনে এনেছিলেন সাদ্দাম। খাবারে প্রচুর পরিমাণে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ‘দুই প্রেমিকা’কে খাওয়ান। তার পর শ্বাসরোধ করে মা-মেয়েকে খুন করেন তিনি। প্রমাণ লোপাটের জন্য দু’টি দেহ নিজের গাড়িতে তোলেন অভিযুক্ত। তার পর ঝিকুড়খালি এলাকায় একটি ইটভাটায় নিয়ে গিয়ে দুটো দেহ পোড়ানোর চেষ্টা করেন। সাদ্দামের ব্যবহৃত গাড়ি এবং সেই ভাড়াবাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। ঘটনাক্রমে সাদ্দামের সহযোগীদের নামও জানা যায়। তাঁরা হলেন মঞ্জুর আলম মল্লিক, শুকদেব দাস ওরফে শিবু এবং আমিনুর হোসেন ওরফে সিন্টু। চার জনকেই গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন) এবং ২০১ (প্রমাণ লোপাট) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। ধৃতদের বিরুদ্ধে সমস্ত অভিযোগই প্রমাণ হয়েছে।




শনিবার সরকারি আইনজীবী বলেন, “দীর্ঘ বিচারপ্রক্রিয়া শেষে ধৃতদের ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন বিচারক। অনাদায়ে ৫ মাসের অতিরিক্ত সশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া ২০১ ধারায় ৫ বছরের জেল-সহ ৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। তবে দুই সাজাই একসঙ্গে চলবে বলে জানিয়েছে আদালত।’’ অন্য দিকে, আসামিদের পক্ষের আইনজীবী সুব্রতকুমার মাইতির দাবি, “এই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সাজা ঘোষণা হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় যথেষ্ট নয় বলেই আমাদের মনে হয়েছে। আমরা এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আবেদন জানাব।’’

Countdown Timer

Comments

Popular posts from this blog

কে এই নুরা পাগলা? পরিচয়ে মিলল ভয়াবহ তথ্য!

যে ৪ ধরনের যৌ'ন মিলন নিষিদ্ধ: ইসলামের কড়া নির্দেশ

যেসব মেয়ে কখনো স”হ”বা”স করেনি তাদের চেনার উপায়